লটকনের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

লটকন এক ধরনের গ্রীষ্মকালীন রসালো ফল। যা মূলত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পাওয়া যায়। এই ফলটি শুধু স্বাদে মিষ্টি নয় পুষ্টিগুণেও ভরপুর। লটকনের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।

লটকন-ফলের-পুষ্টিগুণ-ও-উপকারিতা

আজকের এই আর্টিকেলটিতে লটকন ফলের গুনাগুন ও উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। লটকন বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার সহ অনেক দেশে পাওয়া যায়। প্রতিনিয়ত এই ফলের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।

পেজ সূচিপত্রঃ লটকন খাওয়ার কয়েকটি কার্যকরী উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে দেওয়া হলো

লটকন ফলের উপকারিতা

লটকন ফল শুধু সাধে মিষ্টি ও টক রসালো নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। লটকন ফল খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্যের অনেক উপকার সাধিত হয়। নিম্নে লটকন ফলের কয়েকটি উপকারিতা উল্লেখ করা হলো-
  • লটকন ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। কারণ লটকনে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। সর্দি-কাশি ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
  • লটকন ফল হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পাচনতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
  • লটকন ফল অ্যানিমিয়া দূর করে কারণ লটকনে রয়েছে আইরন যার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এবং এনিমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • লটকন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
  • লটকন ফল ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে, কারণ লটকনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এওসি রাখতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া কমায়।
  • লটকন ফল ওজন কমাতে সাহায্য করে কারণ লটকনে ক্যালরি কম রয়েছে এবং ফাইবার বেশি থাকার কারণে এটি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • লটকনে থাকা ভেষজ উপাদান ত্বকের ছোটখাটো সমস্যা ফোঁড়া বা চুলকানিতে উপকারী
  • লটকন আনসার প্রতিরোধের সম্ভাব্য সহায়ক কারণ এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করে এবং কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
  • গরমকালে এটি ভালো একটি এনার্জি ফল হিসেবে কাজ করে, কারণ লটকনে থাকা প্রাকৃতিক চিনি দ্রুত শক্তি যোগায়।

লটকনের বিচি খেলে কি হয়?

লটকনের বিচি সাধারনত খাওয়ার জন্য উপযোগী নয় এবং এটি খাওয়া উচিত নয়। কেউ কেউ যদি ভুলবশত এক দুইটি বিচি গিলে ফেললে তাদের সমস্যা হয় না। তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃত বেশি লটকনের বিচি খেয়ে ফেলে তাহলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ লটকনের ভীতি শক্ত হওয়ায় এটি সহজে হজম হয় না, তাই এটি খাওয়ার পর পেটে অস্বস্তি, পেট ব্যথা বা কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে। লটকনের বিচিতে প্রাকৃতিক ট্রেনিং থাকতে পারে যা অতিরিক্ত খেলে বিষক্রিয়া করতে পারে। অনেক সময় আমরা ভুলবশত অনেকগুলো বিজি একসাথে গিলে ফেললে তা পেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য ডাক্তারের কাছেও যাওয়া লাগতে পারে।

মৌসুমী ফল লটকনের পুষ্টিগুণ

লটকন ফল একটি জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফল। এটি দেখতে ছোট, গোলাকার এবং হালকা হলুদ রঙের হয়। বর্তমান বাজারে লটকন ফলের চাহিদা ব্যাপক। কারণ লটকন ফল খেতে টক মিষ্টি এবং অত্যন্ত রসালো। শুধু স্বাদেই নয়, এর পুষ্টিগুণ অনেক। চলুন নিম্নে লটকনের পুষ্টিগুণ তালিকা আকারে দেওয়া হলঃ
উপাদান পরিমান উপকারিতা
শক্তি ৬০-৭০ কিলো ক্যালরি দ্রুত শক্তি যোগায়
কার্বোহাইড্রেড ১৫-১৮ গ্রাম শক্তির প্রধান উৎস
ফাইবার ১.৫-২ গ্রাম হজমে সহায়তা করে
ভিটামিন সি ২০-৩০ মিলিগ্রাম রোগ প্রতিরোধে সহায়ক
ভিটামিন এ অল্প পরিমানে চোখের জন্য ভালো
পটাসিয়াম ২৫০ মিলিগ্রাম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
আয়রন ০.৫-১.০ মিলিগ্রাম রক্তসল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক
ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস অল্প পরিমানে হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক

বাংলাদেশে লটকন ফলের গুরুত্ব

লটকন ফল বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় মৌসুমী ফল, যা দেশের অর্থনীতি, কৃষি এবং পুষ্টি এই তিনটি দিকে বিশেষ অবদান রাখে। চলুন দেখে নেই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লটকন ফলের গুরুত্ব ঠিক কোথায়। বাংলাদেশের সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে লটকনের চাষ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এসব এলাকায় এটি চাষের মাধ্যমে কৃষকের আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে। মৌসুমে লটকনের চাহিদা অনেক বেশি, তাই কৃষকেরা এই ফল চাষ করে গ্রীষ্মকালীন সময়ে ভালো লাভবান হতে পারেন। লটকনের বিশেষ স্বাদ ও স্বাস্থ্য গুণের কারণে এটি বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনাময় ফল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ

বাংলাদেশে লর্ড কোন ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। লটকন ফলে রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্যগত গুরুত্ব। লটকন ফলে রয়েছে ভিটামিন সি এর ভালো উৎস যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এমনকি শিশুদের ও বৃদ্ধদের জন্য উপকারী একটি ফল। এটি হজম প্রক্রিয়া ও রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আছেন তাদের জন্য আদর্শ ফল হল লটকন। এছাড়াও লটকন ফলের পরিবেশগত অনেক গুরুত্ব রয়েছে। লটকন গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে ও পরিবেশে ছায়া দেয় এবং এটি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

বাংলাদেশে লটকন ফলের গুরুত্ব অনেক। এটি একটি পরিবেশবান্ধব গাছ কারণ ফুল ও ফল মৌমাছি ও বিভিন্ন পাখির প্রাকৃতিক খাবার হিসেবে এই কাজটি সহায়ক হয়ে উঠেছে। গ্রামীন এলাকায় লটকন একটি পরিচিত ফল, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান বা বড় বড় পারিবারিক উৎসবের খাদ্য তালিকায় এই ফলটি রাখা হয়। লটকন ফল কাঁচা ছাড়াও আচার এবং শরবত ইত্যাদি তৈরি করে খাওয়া যায়। লটকন ফল বাংলাদেশের জন্য একটি পুষ্টিকর, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব সম্পদ। আমরা যদি লটকন ফলে চাষ বৃদ্ধি করি তাহলে গ্রামীণ অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

লটকন চাষ পদ্ধতি

লটকন একটি জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন ফল যা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ি ও উঁচু জমিতে ভালো ফলন দেয়। এটি চাষ করা খুবই সহজ এবং তুলনামূলক কম খরচ হয়, যার কারণে কৃষকেরা অল্প খরচে বেশি লাভবান হয়। নিম্নে লটকনের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
  1. আবহাওয়া ও মাটিঃ গরম ও আদ্র জলবায়ু লটকনের জন্য উপযোগী। ২৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ভালো। লটকন মূলত দোআঁশ ও পেলে মাটিতে ভালো হয়। তবে এটি উঁচু জমিতে ভালো চাষ হয়।
  2. চারা প্রস্তুতি ও রোপনঃ লটকনের বীজ থেকে সহজেই চারা পাওয়া যায় তবে ফল আসতে সময় লাগে ৬-৭ বছর। গুটিকলম বা গ্রাফটিং পদ্ধতির চারা রোপন করলে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। লটকন গাছ রোপনের সময় গর্তের আকার দুই ফুট হয়। প্রতি গর্তে পাঁচ থেকে সাত কেজি গোবর, ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৫০ গ্রাম এমওপি মেশাতে হবে। এটি রোপণের সময় হল বর্ষাকালে জুন থেকে আগস্ট এর দিকে। এই সময় চারা রোপন করলে অতি দ্রুত ফল পাওয়া যায়।
  3. চাষ ব্যবস্থাপনাঃ লটকন চাষের জন্য প্রথম বছর প্রয়োজনীয় সেচ দিতে হয় এবং গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরমে মাটির আদ্রতা ধরে রাখতে হয়। গাছের শাখা প্রশাখা ছাটাই করলে ফলন বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও পোকামাকড় ও রোগ দেখা দিলে প্রাকৃতিক বা অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।

লটকন খাওয়ার পাঁচটি কার্যকরী উপকারিতা

লটকন খাওয়ার অনেকগুলো কার্যকারী উপকারিতা রয়েছে। লটকন মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। নিম্নে লটকন খাওয়ার পাঁচটি কার্যকরী উপকারিতা দেয়া হলো
  1. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ লটকনে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এছাড়াও ঠান্ডা জনিত সমস্যা সর্দি কাশিতে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  2. হজম শক্তি বাড়ায়ঃ লটকন ফল খেলে হজম শক্তি বাড়ে কারণ লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছেন তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ ফল। এটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য আপনা আপনি দূর হয়ে যাবে।
  3. রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করেঃ ফল রক্ত শূন্যতা প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকরী। কারণ লটকনে রয়েছে আয়রন যা হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে।
  4. ত্বক ও চুলের জন্য উপকারীঃ লটকন স্বাস্থ্যের পাশাপাশি চুলের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। কারণ লটকনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ এবং সি ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং চুল পড়া কমাতে সহায়তা করে। 
  5. ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ লটকন শরীরের ওজন কমাতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। কারণ লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হয়।

লটকন ফলের অপকারিতা

লটকন একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মৌসুমী ফল হলেও অপকারিতা প্রত্যেকটি জিনিসেরই থাকে। কারণ যে জিনিসের উপকার থাকে সেই জিনিসের আবার অপকারও থাকে। তবে লটকন ফল যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে কিছু অপকারিতা দেখা দেয়। লটকন ফল খেলে পেটে গ্যাস,ডায়রিয়া, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য প্রয়োজনে তুলনায় বেশি লটকন খাওয়া ঠিক নয়। লটকনের বিচি খেলে উপকারের চেয়ে বরং ক্ষতি টাই বেশি হবে। লটকনের বিচিতে টক্সিক উপাদান থাকে, এছাড়াও এটি বাচ্চারা হঠাৎ গিলে ফেললে গলায় আটকে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীদের এই ফল পরিমিত পরিমাণে যদি না খাওয়া হয় অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা বাড়তে পারে, কারণ লটকনে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি যা গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই ফল খাওয়া উচিত। লটকন কিছুটা ঠান্ডা প্রকৃতির ফল, তাই যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা এটি বেশি খেলে শ্বাসনালীর সমস্যা বাড়তে পারে। লটকন ফল পরিষ্কার পানিতে না ধুয়ে খেলেও অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। বাজারে অনেক সময় রিপিনিং কেমিকাল দিয়ে লটকন পাকানো হয় যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

বাংলাদেশে লটকনের উৎপাদন ও চাহিদা

বাংলাদেশের লটকনের উৎপাদন ও চাহিদা বর্তমানে ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে এবং কৃষি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে লটকনের উৎপাদন হয়। খাগড়াছড়িতে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের অর্থবছরে ১২৬ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত হয়েছিল ১৪০০ টন লটকন এবং এটি ২০২২ থেকে ২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ হেক্টর থেকে ফলন হয়েছে ২৭৮২ টন। ২০২৩ থেকে ২৪ সালে আরো সম্প্রসারণের আশা করা যাচ্ছে। এছাড়াও আরেকটি জেলা নরসিংদীতে চলতি মৌসুমে প্রায় ১৮ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে লটকন এবং উৎপাদন হচ্ছে ৩০ হাজার থেকে ৩২ হাজার ৪০০টন যার বাজার মূল্য হতে পারে 40 থেকে ৪৫ কোটি টাকা।

লটকনের চাহিদা বাংলাদেশে ব্যাপক। ২০২৫ সালের জুনে আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন কমলেও দাম প্রায় দ্বিগুণ ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি হয়েছে। সুস্বাদু ও ফরমালিন মুক্ত হওয়ায় ঢাকা, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামে ব্যাপক বিক্রি হয় এই ফল। এটি পাইকারি দরে প্রতি মন তিন হাজার থেকে ৩৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খাগড়াছড়িতে পাইকারি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে এবং ফেনী ও নোয়াখালীতে খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। তবে ভালো ব্যাপার হলো নরসিংদীর জিআই লটকন মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, সৌদি আরব, কাতার, ইংল্যান্ড ইত্যাদিতে রপ্তানি হচ্ছে।

লটকনের যত স্বাস্থ্য উপকারিতা

লটকনের অনেক ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। মানব দেহের জন্য লটকনের ভূমিকা অনেক। লটকনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আঁশ যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যারা অতিরিক্ত ওজন সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত লটকন ফল খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। লটকনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসে।যারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছেন তাদের জন্য আশীর্বাদি ফল হলো লটকন। 

লটকন শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছেন তাদের জন্য লটকন খুবই উপকারী। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় লটকন ফল রাখা জরুরি। লটকন ফল একটি গ্রীষ্মকালীন সিজনাল ফল, এটি খুবই সহজলভ্য হওয়ায় সব বাজারেই এই ফল কিনতে পাওয়া যায়। বর্তমানে এই ফলের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এছাড়াও ত্বক ও চুলের জন্য লটকনের ভূমিকা অপরিসীম। কারণ লটকনে রয়েছে ভিটামিন এ এবং সি যা ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।

শেষ কথা-লটকন ফলের পুষ্টিগুণ এবং বাংলাদেশ এর গুরুত্ব

আজকের এই আর্টিকেলটিতে লটকন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বর্তমানে বাংলাদেশেও লটকনের চাহিদা বেড়ে গেছে এবং প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে লটকন চাষ হচ্ছে বাংলাদেশ এবং কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে। আশা করি, আপনি এই লটকন সম্পর্কে উপরিউক্ত আলোচনা গুলি পড়ে থাকলে উপকৃত হবেন। আপনি চাইলেও লটকনের উৎপাদন শুরু করে দিতে পারেন এবং লাভজনক ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডেইলি লাইফস্টাইল অ্যান্ড হেলথ্ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url