বয়সের ছাপ কমানোর ঔষধ
বয়সের ছাপ কমানোর জন্য এখন অনেক ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়, যা খেলে বয়সের ছাপ পড়ে না বয়সে ছাপ কমানোর জন্য বেশ কিছু কার্যকরী উপায় রয়েছে। বয়সের ছাপ দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে অনেক কাজে লাগে।
বর্তমানে এন্টি এজিং ক্রিম, সিরাম, বিভিন্ন ফেসপ্যাক মানুষ ব্যবহার করে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি বয়সে ছাপ কমানোর কিছু কার্যকরী টিপস দিব। যেটা পড়লে এবং জানলে আপনি অনেকটাই উপকৃত হবেন।
পেজ সূচিপত্রঃ বয়সের ছাপ কমানোর ঔষধ ও কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো
বয়সের ছাপ কমানোর সিরাম
একজন মানুষের ৩০ বছর পার হলেই তার মুখে যত্ন না নিলে বয়সের একটা ছাপ পড়তে দেখা
যায় যেটা দেখতে একদমই ভালো লাগেনা, আবার অনেকে আছে বয়সের আগেই অল্প বয়সেই
বয়সের ছাপ পড়ে। বয়সের ছাপ কমানোর জন্য অনেক ধরনের শ্রীরাম পাওয়া যায়, তবে
কিছু কার্যকরী উপাদান দিয়ে তৈরি সিরাম রয়েছে। নিম্নের কয়েকটি কার্যকরী
উপাদান দিয়ে তৈরি সেরামের সম্পর্কে জানব যা বয়সের ছাপ দূর করতে সহায়তা
করে
- ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের কোলাজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, হলে তো কারো টানটান ও মসৃণ উজ্জ্বল হয়।
- পেপটাইডঃ পেপটাইড ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ত্বকে এলাাস্টিন এবং কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, ফলে ত্বক শক্তিশালী এবং দৃঢ় হয়।
- রেটিনলঃ ভিটামিন এ এর রূপ হল, যা ত্বকের কোষের পুনর্জন্ম ত্বরান্বিত করে। এটি ত্বকের বলিরেখা এবং ফাইন লাইন দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বকে টানটান ও উজ্জ্বল করে।
- হায়ালুরনিক অ্যাসিডঃহায়ালুরনিক অ্যাসিড ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের বলি রেখা দৃশ্যমান কমাতে সাহায্য করে, এটি ত্বককে পূর্ণাঙ্গ এবং মসৃণ দেখায়।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপাদান গ্রিন টি এক্সট্র্যাক্ট। এটা ত্বককে ডার্ক সার্কেল থেকে রক্ষা করে, যা ত্বকের বার্ধক্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
বর্তমান সময়ে বাজারে বা অনলাইনে বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্যান্ডের সিরাম পাওয়া যায়
নিম্নে কয়েকটি ব্র্যান্ডের নাম দেয়া হলো
- Biocare retinol serum
- The Ordinary serum
- Loreal Revitalift
- Neoutrogena Hydro Boost
বয়সের ছাপ কমানোর খাবার
পৃথিবীতে অনেক ধরনের মানুষ রয়েছে যাদের দেখলে মনে হয় এখনো তরুণ রয়েছে কিন্তু
বয়স জানতে গেলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন কারণ তার বয়স তখন 50 বছর পেরিয়ে গেছে,
কিন্তু ত্বকে কোন বয়সের ছাপ পড়েনি। কারণ তারা দৈনন্দিন জীবনযাপনে কিছু
খাবার ডায়েটে রাখেন যা তাদের বয়সে ছাপ কমানোর জন্য অনেক টাই হেল্প করেন। চলুন
জেনে নিই বয়সে ছাপ কমানোর কয়েকটি খাবারের নাম ও বর্ণনা-
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ শরীরে কোলাজেন উৎপাদনে অ্যামিনো এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরে এমিনো এসিডের মাত্রা বাড়ে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হল মাংস, ডিম, টোফু, মাছ, দুধ, বিভিন্ন ধরনের বাদাম ইত্যাদি। এগুলো খাবার প্রোটিন সমৃদ্ধ হয় উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ভিটামিন সিঃ ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনের জন্য ভিটামিন সি এর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ ভিটামিন সি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি এর মূল উৎস হল টক জাতীয় ফল এছাড়াও কাঁচা মরিচ, লাল মরিচ, পেঁপে, টমেটো, হলুদ বেলপেপার ইত্যাদিতে ভিটামিন সি ভরপুর রয়েছে।
- মাংসের হাড়ের সুপঃ আমরা প্রতিনিয়ত গরু বা খাসির মাংস খেয়ে থাকি কিন্তু আমরা এর হার ফেলে দেই । তবে ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে চাইলে হাত দিয়ে স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে কোলাজেন থাকে।
- ডার্ক চকলেটঃ ডার্ক চকলেটের অনেকগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। অনেকেই চকলেট অনেক পছন্দ করে, ডার্ক চকলেটে রয়েছে উপকারি পুষ্টিগুণ যেমন ক্যাফেইন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। এগুলো বয়সে ছাপ কমাতে এবং বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- আনারসঃ আনারসে রয়েছে অ্যান্টি এজিং ফর্মুলা, এ টি ভিটামিন সি এর দুর্দান্ত উৎস। যা কোলাজিন তৈরির জন্য বিশেষভাবে কাজ করে।
- ওটসঃ দৈনন্দিন জীবনে ডায়েটে অনেকে ওটস রাখেন। বেশ তো ভালো রাখার জন্য ভাতের বদলে মানুষ নাস্তায় ওটস খান, ওটসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এটি শরীরের শক্তি জোগাতে এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ওটস যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- হলুদঃ আমরা মোটামুটি সবাই হলুদের সাথে পরিচিত। এটি রান্না ঘরের মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়। হলুদের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না এবং এটি শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে।
- লেবুঃ বর্তমান সময়ে মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ায় সকালে ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খায় এতে অনেক উপকার সাধিত হয়, কারণ লেবুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। মেয়েরা নিয়মিত ভিটামিন সি গ্রহণ করলে তাদের ত্বকে কম বলি লেখা পড়ে এবং ত্বক থাকে টান টান।
আরো পড়ুনঃ
ছেলেদের বয়সের ছাপ কমানোর উপায়
ছেলেদের বয়সের ছাপ কমানোর উপায়। কি শুনতে অবাক লাগছে, মেয়েরা তো সচরাচর
রূপচর্চা করে ছেলেরাও রূপচর্চা করে তাদের কি প্রয়োজন? আমরা মোটামুটি এই উক্তির
সাথে পরিচিত। তবে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও ত্বকের যত্ন নিতে হবে। কারণ
ছেলেদের বয়সে ছাপ পড়তে পারে অকালে। যে সব পুরুষ বেশিরভাগ সময় বাইরে এবং
রোদে ঘুরে বেড়ান তাদের ত্বক অতি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক ছেলেরাই আধুনিক
যুগে ফেসওয়াশ ব্যবহার করার নিয়মিত এতে মুখের উপরের অংশ পরিস্কার হলেও ত্বকের
গভীরে থাকা ময়লা দূর হয় না।
তাই ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে আমরা মাঝেমধ্যে স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারি
এতে মুখে তেলতেলে ভাব কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। ছেলেদের বয়সের ছাপ দূর করার
জন্য স্ক্রাবের ভূমিকা অপরিসীম। স্ক্রাপ ব্যবহার করা খুব সহজ প্রথমে মুখে
পানি দিয়ে ধুয়ে নিন তারপর অল্প একটু স্ক্রাব নিয়ে পুরো মুখমণ্ডলে আলতো করে
ঘষতে থাকুন ২-৩ মিনিট ঘষার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন তারপর মুখে ময়শ্চারাইজার
লাগিয়ে নিন এতে করে মুখের লাবণ্যতা ফিরে আসবে এবং বয়সের ছাপ দূর হবে। তাই
ছেলেদের জন্য এটি উৎকৃষ্ট উপায় প্রতিনিয়ত স্ক্রাবিং করা।
ছেলেরা প্রতিনিয়ত বাইরের রোদে ঘুরে বেড়ায় এবং বাইরেই বেশি কাজ থাকে এজন্য
তাদের মুখে খুব তাড়াতাড়ি রোদে পোড়া ভাব তৈরি হয়, কারণ সূর্যের
অতিবেগুনি রশ্মি থেকে টক বাঁচাতে হলে কিছু যত্নের প্রয়োজন। অল্প বয়সে ত্বকের
বয়স কমাতে চাইলে নিয়মিত বাহিরে যাওয়ার 15 মিনিট আগে একটি ভালো ব্র্যান্ডের
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন নয়তো ফুল হাতা শার্ট পড়ুন। এছাড়াও চাইলে সানগ্লাস,
ক্যাপ ও ছাতা ব্যবহার করতে পারেন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এগুলো
নিয়ম মেনে চললে বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দিবে এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখবে।
চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ার কারণ
আমরা প্রত্যেকেই নিজের অজান্তেই নিজের চেহারার যত্ন না নেওয়ার কারণে
বয়সের ছাপ অতি দ্রুত পড়ে যায়। চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ার অনেকগুলো কারণ
রয়েছে নিম্নে তা বর্ণনা করা হলোঃ
- সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিঃ অনেকেই দীর্ঘ সময় রোদে থাকার কারণে ত্বকে সূর্য জনিত বয়সের ছাপ পড়ে, যার কারণে ত্বকে ভাজ এবং চামড়া কালচে হয়ে যেতে পারে।
- হরমোন পরিবর্তনের কারণেঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রত্যেকটি মানুষের হরমোনের পরিবর্তন হয় বিশেষ করে মেয়েদের বেশি, কারণ মেয়েদের মেনোপজের সময় হর মনের পরিবর্তনের কারণে ত্বক শুষ্ক এবং পাতলা হয়ে যায়।
- কোষ পুনর্গঠন দেরিতে হয়ঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে দেরি হয় ফলে মৃত কোষ জমে গিয়ে চেহারার জেল্লা নষ্ট করে দেয়।
- কোলাজেন বৃদ্ধি ব্যাহত করেঃ আমাদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীরে কোলাজেন ও ইলাস্টিন নামক প্রোটিন কমে যায় এজন্য ত্বককে টানটান ও নমনীয়তা দূর হয়ে যায় এবং বলিরেখা দেখা দেয়।
- মানসিক চাপঃ চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ার আরেকটি কারণ হলো মানসিক চাপ। যারা সব সময় মানসিক ভাবে দুশ্চিন্তায় থাকেন তাদের শরীরে করতিসল হরমোন বাড়তে থাকে যা ত্বককে বার্ধক্য এনে দেয়।
- পানি শূন্যতাঃ একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ৩ লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা সে নিয়ম না মানলেই পড়ে যায় চেহারায় বয়সের ছাপ। নিয়মিত সঠিক নিয়মে পানি না খেলে অতি দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে যায়।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসঃ বর্তমান সময়ে আমরা বাইরের খাবারের প্রতি বেশি ঝোক তৈরি হওয়াতে আমরা নিজেরাই নিজেদের ত্বকের ক্ষতি করছি। কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শরীরে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তৈরি করতে দেয় না ফলে এই দুইটির অভাবে ত্বক তার উজ্জ্বল্য হারায়।
আরও পড়ুনঃ
বয়সে ছাপ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
বয়সের ছাপ দূর করতে অনেকেই প্রাকৃতিক উপায়ের উপর অনুসরণ করে চলে। এই
প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করে বয়সের ছাপ দূর করা অনেকটাই সম্ভব। চলুন জেনে নেই
প্রাকৃতিকভাবে কি ব্যবহার করলে বয়সের ছাপ পড়বে না।
বয়সের ছাপ প্রাকৃতিকভাবে দূর করতে শসা ও গোলাপজলের ভূমিকা অপরিসীম। শসা ত্বকে
ঠান্ডা এবং হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে, গোলাপজল টোনার হিসেবে খুব ভালো কাজ
করে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন শসার রস গোলাপ জল মিশিয়ে তুলায় নিয়ে মুখে
লাগান এবং ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন তাহলে আপনারা একটি কার্যকরী ফলাফল
পাবেন।বয়সে ছাপ দূর করতে প্রাকৃতিক উপায়ে এলোভেরার গুনোগান অনেক। কারণ
এলোভেরা তে থাকে ভিটামিন ই, সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে উজ্জ্বল ও
মসৃণ করে। এলোভেরা জেল প্রতিদিন মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে
ফেলুন। এটি বয়সের ছাপ দূর করতে অনেকটাই সাহায্য করে।
প্রাকৃতিকভাবে বয়সে ছাপ দূর করতে অলিভ অয়েল এর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ অলিভ
অয়েল তোকে পুষ্টি যোগায় ও বলিরেখা প্রতিরোধ করে। রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম
অলিভ অয়েল দিয়ে মেসেজ করুন তাহলে উপকার পাবেন। নিয়মিত সানস্ক্রিন
ব্যবহার করুন সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে সূর্যের ইউভি রশ্মি থেকে ত্বকের
রক্ষা করে। বাড়ির বাইরে যাওয়ার কোন মিনিট আগে জিংক অক্সাইড যুক্ত
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এছাড়াও আরেকটি নিয়ম আমাদের প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর
রাখে সেটি হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। দিনে কমপক্ষে সাত থেকে আট
গ্লাস পানি পান করুন।
বয়সের ছাপ দূর করার আরেকটি প্রাকৃতিক উপায় হল প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম
নিশ্চিত করুন। নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করতে পারেন মানসিক চাপ কমানোর জন্য।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্পন্ন খাবার গ্রহণ করুন যেমন বাদাম, গাজর, টমেটো, গ্রীনটি
ইত্যাদি। তবে মনে রাখবেন প্রাকৃতিক উপায় গুলো সময় সাপেক্ষ, এটি নিয়মিত
ব্যবহার করতে হবে তাহলেই সফল ফলাফল পাবেন। যদি কোন প্রাকৃতিক জিনিসে আপনার
অ্যালার্জি থাকে সেজন্য ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করুন।
বয়সে ছাপ দূর করার ব্যায়াম
বয়সে ছাপ দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপায় এর মতনই ফেস ইয়োগা বা মুখের ব্যায়াম
অত্যন্ত জরুরি। এগুলো ত্বকের নিচের বেশি শক্ত করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
এতে করে আমাদের মুখের বলিরেখা কমায় এবং বয়সে ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।
নিম্নে কিছু কার্যকরী মুখের ব্যায়াম দেওয়া হলোঃ
- V মুখ ব্যায়ামঃ এই ব্যায়ামটি নিয়মিত করলে চোখের নিচে এবং কপালের বলিরেখা দূর করে। এই ব্যায়ামটি করার সময় দুহাতের মধ্যমা ও তর্জন দিয়ে V তৈরি করুন, এরপর মধ্যমা ভুর ওপর রাখুন এবং তর্জনী ভ্রুর বাইরের দিকে এবং নিচের দিকে চাপ দিয়ে দেখুন কপালের বেশি কাজ করছে কিনা তারপর পাঁচ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং এটি দিনে পাঁচ বার করুন।
- চিন লিফটঃ নিয়মিত এই ব্যায়ামটি করলে ঠোঁট ও চিবুকের বলি রেখা দূর করে।চিন লিফট করার সময় মুখ বন্ধ রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট টানটান করে উপরের দিকে তুলুন চুমু দেওয়ার ভঙ্গিতে, পাঁচ সেকেন্ড ধরে রাখুন। প্রতিদিন এটি ১০ বার করুন।
- ফোর হেড স্মুথারঃ এই পদ্ধতিতে ব্যায়াম করলে কপালের বলিরেখা দূর হয়। প্রথমে কপালে হাত রেখে ত্বককে হালকা টানুন যাতে কপাল মসৃণ হয় এরপর চোখ বড় করে খুলে রাখুন মুখ রিল্যাক্স রাখুন তারপর পাঁচ সেকেন্ড ধরে রাখুন। দিনে ৫ বার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
- লা ব্যায়ামঃ এই ব্যায়ামটি মুখের পেশি স্ট্রেচ এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। প্রথমে মুখ বড় করে খুলুন এবং লা শব্দটি টেনে বলুন। প্রতিদিন এটি ১০ বার করে বলুন তাহলে উপকার পাবেন।
- বেলুন মুখ ব্যায়ামঃ এই ব্যায়াম করলে ত্বকের চামড়া ঝুলে পড়া থেকে রোধ করে। এই ব্যায়ামটি করার পদ্ধতি হল প্রথমে মুখ বন্ধ করে গাল ফুলিয়ে রাখুন, তারপর এক পাশে বাতাস রাখুন তারপর অন্য পাশে বাতাস রাখুন। প্রতিদিন ৩০ সেকেন্ড করে তিন থেকে পাঁচ বার করলে ভালো ফলাফল পাবেন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এসব ব্যায়াম করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
মেয়েদের বয়সে ছাপ কমানোর ক্রিম
আজকালকার যুগে মেয়েরা তাদের ত্বকের ব্যাপারে খুবই সচেতন। এই কারণে তারা বয়সের
ছাপ দূর করার জন্য কিছু ক্রিম ব্যবহার করে থাকে যা তাদের ত্বকের বলিরেখা দূর
করে এবং রিংকেল করতে দেয় না। বাজারে এবং অনলাইনে এরকম অনেক ভালো ব্র্যান্ডের
কিছু ক্রিম পাওয়া যায় যা মেয়েদের বয়সে ছাপ দূর করতে অনেকটাই সাহায্য করে।এই
ক্রিমগুলোতে পেপটাইড, ভিটামিন বি থ্রি, রেটিনোল, রেটিনল থ্রি
কমপ্লেক্স ইত্যাদি উপাদান দ্বারা তৈরি। চলুন কয়েকটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের
ক্রিমের নাম জানি যেগুলো মেয়েদের বয়সে ছাপ কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে
- Loreal Paris Revitalift night cream
- Ponds Age Miracle Wrinkle corrector day cream
- Olay Regenerist Micro Sculpting cream
- Himalaya Anti Wrinkle cream
- Neoutregena Rapid Wrinkle Repair Cream
রেটিনল কি?
রেটিনল একটি ভিটামিন এ এর একটি রূপ, যা স্কিন কেয়ারে অনেক কার্যকরী
উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি বিশেষ করে এন্টি এজিং এবং ব্রোন চিকিৎসায়
জনপ্রিয়। এছাড়াও রেটিনলের উপকারিতা অনেক। এটি বলিরেখা ও ফাইন
লাইন হ্রাস করে। কালকে ভাব ও দাগ দূর করে, এছাড়াও এটি মৃত কোষ ও তেল জমতে
দেয় না। এটির আরেকটি উপকারিতা হলো এটি ত্বকের পিগমেন্টেশন কমায়
ফলে ত্বকে সান স্পট, মেছতা হালকা করে। তবে এটি ব্যবহারের আগে এটি
আপনার ত্বকে শুট করছে কিনা দেখে নিতে হবে যদি এটি ব্যবহারের ফলে তোকে লালচে ভাব
বা শুষ্ক ভাব তৈরি হয় তাহলে এটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। মূলত রেটিন অল রাতে
ব্যবহার করতে হয়। দিনে ব্যবহার করলে তার আগে সানস্ক্রিম ইউজ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
ত্বকের যত্নে রেটিনলের কাজ
রেটিনল ত্বকের যত্নে একটি গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড উপাদান হিসেবে পরিচিত।
বিশেষ করে বয়সের ছাপ, দাগ, ব্রণ ও দুঃখতা দূর করতে সাহায্য করে। নিম্নে ত্বকের
যত্নে রেটিনলের কাজ পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলঃ
- রেটিনল কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় যা ত্বককে টানটান ও তরুণ দেখায়
- রেটিনল বলিরেখা ও বয়সের ছাপ কমায়
- রেটিনল ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং পোর পরিস্কার করে
- ত্বকের টেক্সচার উন্নত করে
- ত্বকের রং উজ্জ্বল করে
- নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে এবং পুরনো কোষ ঝরে পড়তে সাহায্য করে
- ফাইন লাইনহালকা করতে সাহায্য করে
শেষ কথা-বয়সে ছাপ দূর করার ঔষধ ও ঘরোয়া উপায়
এই আর্টিকেলটিতে শেষে বলতে চাই বয়সের ছাপ দূর করার অনেক ধরনের ঔষধ রয়েছে
যা আমাদের ত্বকে টানটান করে এবং বয়স বুঝতে দেয় না। তবে আমার মতে ঘরোয়া
উপায়ে নিজের ত্বককে সুন্দর রাখা বেশি জরুরী। উপরে উল্লেখিত কয়েকটি প্রাকৃতিক
উপায়ে এবং ঘরোয়া ভাবে কিভাবে রূপচর্চা করে বয়সে ছাপ কমানো যায়
তা উল্লেখ করেছি। আশা করি উপরে উক্ত আলোচনা গুলো পড়লে আপনি অনেকটাই
উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।
ডেইলি লাইফস্টাইল অ্যান্ড হেলথ্ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url